moriika

আলোর পূর্ণ আভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের দরুন উত্তপ্ত মরু অঞ্চল বা শীতপ্রধান মেরু অঞ্চলে এক ধরনের দৃষ্টিভ্রম ঘটে। এটিই মরীচিকা।

উত্তপ্ত মরুভুমিতে মরীচিকা গঠনে আলোর ভূমিকা:
মরুভুমিতে তৃষ্ণার্ত মানুষের মনে হয় সামনে অল্প দূরত্বে পানি আছে। অথচ সেখানে পানি থাকে না। মরু পথচারীর এ দৃষ্টিভ্রমই মরীচিকা। মরুভূমিতে সূর্যের প্রচন্ড তাপে বালি খুব তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয়। ফলে বালিসংলগ্ন বায়ু উত্তপ্ত হয়ে হালকা হয়। আর দিবাভাগে এজন্য ভূপৃষ্ঠের নিচের বায়ু হালকা থাকে এবং উপরের বায়ুু ঘন থাকে। মরুভুমিতে দূরে কোন গাছ থেকে আলোকরশ্মি পথিকের চোখে আসার সময় ঘনতর মাধ্যম হতে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করে। ফলে প্রতিসরিত রশ্মি অভিলম্ব থেকে দূরে সরতে সরতে এক সময় প্রতিসরণ না হয়ে পূর্ণ আভ্যন্তরীণ প্রতিফলন হয়। এ সময় আপতন কোণ ক্রান্তিকোণের চেয়ে বড় হয়। পূর্ণ আভ্যন্তরীণ প্রতিফলন হওয়ায় আলোকরশ্মি বেঁকে গিয়ে দর্শকের চোখে পড়ে, আর দর্শকের চোখ থেকে আলোকরশ্মি পেছনের দিকে বর্ধিত করলে গাছের একটি উল্টা বিম্ব গঠিত হয়। পথিকের কাছে আলোর এই ঘটনা ধরা পড়ে না। ফলে তার নিকট মনে হয় গাছের নিচে কোন জলাশয় আছে এবং পথিকের এই দৃষ্টিভ্রমই মরীচিকা। এ কারণে প্রখর রৌদ্রে উত্তপ্ত পিচঢালা পথ ভেজা মনে হয়।
শীতপ্রধান মেরু অঞ্চলে মরীচিকা গঠনে আলোর ভূমিকা :
শীতপ্রধান মেরু অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের নিকটস্থ বায়ুস্তর বেশি ঠান্ডা থাকায় এর ঘনত্ব বেশি থাকে। কিন্তু উপরের স্তরগুলো ক্রমশ অপেক্ষাকৃত উষ্ণ থাকে এবং নিচের কোন স্তর অপেক্ষা পরবর্তী উপরের স্তরের ঘনত্ব কম হয়। ভূপৃষ্ঠের দূরবর্তী কোন বস্তু হতে আগত আলোকরশ্মি ক্রমাগত নিচের ঘনতর স্তর হতে উপরের লঘুতর স্তরে প্রতিসারিত হওয়ার সময় অভিলম্ব হতে দূরে সওে যায়। এভাবে আলোকরশ্মি অভিলম্ব হতে দূরে সরতে সরতে এক সময় পূর্ণ আভ্যন্তরীণ প্রতিফলন ঘটে। ফলে আলোকরশ্মি ক্রমাগত উপরের লঘুতর স্তর হতে নিচের ঘনতর স্তরে প্রসারিত হয়ে অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায়। এ আলোকরশ্মি যখন কোন দর্শকের চোখে পড়ে তখন দর্শকের নিকট আলোক রশ্মিটি উপরের দিকে হতে আসছে বলে মনে হয় এবং দর্শক বস্তুর একটি উল্টো প্রতিবিম্ব উপরের দিকে।(আকাশের দিকে ঝুলন্ত অবস্থায়) দেখতে পায়। এটিই শীতপ্রধান অঞ্চলের দৃষ্টিভ্রম বা মরীচিকা।

Subject

Chemistry