যে প্রক্রিয়ায় ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াস বিভক্ত হয়ে প্রায় সমান ভরের দুটি নিউক্লিয়াস উৎপন্ন করে এবং একাধিক নিউট্রন ও বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয় তাকে ফিশন বলে। নিউট্রন দ্বারা আঘাত করে যদি কোন ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে প্রায় সমভরবিশিষ্ট দুটি অংশে বিভক্ত করা যায় এবং প্রচন্ড পারমাণবিক শক্তির উদ্ভব হয়, তাহলে নিউক্লিয়াসের এ বিভাজনই নিউক্লিয় ফিশন। ফিশন এর মূল কথা হলো নিউক্লিয় বিভাজন। সাধারণত যে সব পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা ৯২ বা তার অধিক তারা ফিশন বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে। ১৯৩৪ সালে ইউরোনিয়ামের বিভাজন প্রক্রিয়া নিয়ে বিজ্ঞানী ফার্মি। ফার্মির সূত্র ধরে ১৯৩৮ সালে ফিশন বিক্রিয়া আবিষ্কার করেন দুই জার্মান বিজ্ঞানী অটোহান ও স্ট্রেসম্যান। অটোহান ও স্ট্রেসম্যান ইউরোনিয়াম নিউক্লিয়াসের উপর ধীরগতি তথা কম শক্তিসম্পন্ন নিউট্রনের আঘাত পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, ইউরেনিয়াম নিউক্লিয়াস প্রায় সমান দুই অংশে বিভক্ত হয়ে যায়। উৎপন্ন দুই অংশের একটি বেরিয়ামের (z=56) ও অপরটি ক্রিপটনের (z=36) তেজস্ক্রিয় আইসোটোপ। বিক্রিয়াটি নিম্নরুপ:
92U235+0N1=56Ba141+36Kr92+0N1+ শক্তি
অর্থাৎ U235 নিউক্লিয়াসকে নিউট্রন দ্বারা আঘাত করলে খুব ক্ষণস্থায়ী U235 নিউক্লিয়াস সৃষ্টি হয়। এই ক্ষণস্থায়ী নিউক্লিয়াস সাথে সাথে ভেঙ্গে 56Ba141 ও36Kr92 অংশে বিভক্ত হয়ে যায় এবং ৩ টি নিউট্রন ও প্রচুর শক্তি নির্গত হয়। ১৯৪৫ সালে ‘ম্যানহাটান প্রজেক্ট’- এর আওতায় নিউ মেক্সিকোর মরু এলাকায় প্রথম পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ম্যানহাটান প্রজেক্টের তত্ত্ববধায়ক ছিলেন এনরিকো ফার্মি এবং প্রধান বিজ্ঞানী ছিলেন ওপেন হাইমার। ওপেন হাইমারকে পারমাণবিক বোমার আবিষ্কারক বলা হয়। প্রতিটি ফিশনে প্রায় 200 Mev শক্তি উৎপন্ন হয়।
Subject
Physics