করণ কারক: ‘করণ’ শব্দটির অর্থ: যন্ত্র, সহায়ক বা উপায়।
ক্রিয়া সম্পাদনের যন্ত্র, উপকরণ বা সহায়ককেই করণ কারক বলা হয়।
বাক্যস্থিত ক্রিয়াপদের সঙ্গে ‘কীসের দ্বারা’ বা ‘কী উপায়ে’ প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি পাওয়া যায়, তা-ই করণ কারক। যেমন-
নীরা কলম দিয়ে লিখে। (উপকরণ-কলম)
‘জগতে কীর্তিমান হয় সাধনায়।’ (উপায়-সাধনা)
সম্প্রদান কারক: যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে দান, অর্চনা, সাহায্য ইত্যাদি করা হয়, তাকে (সংস্কৃত ব্যাকরণ অনুযায়ী) সম্প্রদান কারক বলে। যেমন- ভিখারীকে ভিক্ষা দাও। স্বত্ব ত্যাগ করে না দিলে কর্মকারক হবে। যেমন-ধোপাকে কাপড় দাও।
অপাদান কারক: যা থেকে কিছু বিচ্যুত, গৃহীত, জাত, বিরত, আরম্ভ, দূরীভূত ও রক্ষিত হয় এবং যা দেখে কেউ ভীত হয়, তাকেই অপাদান কারক বলে। যেমন-
বিচ্যুত : গাছ থেকে পাতা পড়ে।
মেঘ থেকে বৃষ্টি পড়ে।
গৃহীত : শুক্তি থেকে মুক্তো মেলে।
দুধ থেকে দই হয়।
জাত : জমি থেকে ফসল পাই।
খেজুর রসে গুড় হয়।
বিরত : পাপে বিরত হও।
দূরীভূত : দেশ থেকে পঙ্গপাল চলে গেছে।
রক্ষিত : বিপদ থেকে বাঁচাও।
আরম্ভ : সোমবার থেকে পরীক্ষা শুরু।
ভীত : বাঘকে ভয় পায় না কে ?
অধিকরণ কারক: ক্রিয়া সম্পাদনের কাল (সময়) এবং আধার (স্থান) কে অধিকরণ কারক বলে। অধিকরণ কারকে সপ্তমী অর্থাৎ ‘এ’ ‘য়’ ‘তে’ ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। যথা :
আধার (স্থান) : আমরা রোজ স্কুলে যাই। এ বাড়িতে কেউ নেই।
কাল (সময়) প্রভাতে সূর্য ওঠে।
অধিকরণ তিন প্রকার:
১. কালাধিকরণ, ২. আধারাধিকরণ, ৩. ভাবাধিকরণ।
নিম্নে গুরুত্বপূর্ণ কারক ও বিভক্তির উদাহরণ দেওয়া হলো :
পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল।............... কর্তায় শূন্য, কর্মে শূন্য।
রাখাল গরুর পাল লয়ে যায় মাঠে।................. কর্তায় শূন্য।
নগরের নটি চলে অভিসারে যৌবন মদে মত্তা কর্তায় শূন্য; নিমিত্তার্থে ৭মী
শ্রদ্ধাবান লভে জ্ঞান অন্যে কভু নয়.................. কর্তায় ৭মী।
রহিমকে ঢাকা যাইতে হইবে....................... কর্তায় ২য়া।
তাহা দ্বারা একাজ হবে না.......................... কর্তায় ৩য়া।
দশে মিলে করি কাজ............................... কর্তায় ৭মী।
গরুতে গাড়ি টানে.................................... কর্তায় ৭মী।
আমাকে কোরআন পড়িতে হইবে.................. কর্তায় ২রা।
আমার কোরান পড়া হইয়াছে....................... কর্তায় ৬ষ্ঠী।
গরুতে গরুতে লড়াই করিতেছে.................... কর্তায় ৭মী।
তোমার যাইতে হইবে............................... কর্তায় ৬ষ্ঠী।
সকলকে মরিতে হইবে.............................. কর্তায় ২য়া।
ইহা তোমার বিবেচ্য................................ কর্তায় ৬ষ্ঠী।
পাছে লোকে কিছু বলে.............................. কর্তায় ৭মী।
বাঘ মানুষ মারে.................................... কর্তায় শূন্য; কর্মে শূন্য।
মুর্খে কী না বলে...................................... কর্তায় ৭মী।
বাঘে মানুষ মারে.................................... কর্তায় ৭মী।
মানুষে ভাবে এক, হয় আর এক.................... কর্তায় ৭মী।
পাগলে কী না বলে, ছাগলে কী না খায়........... কর্তায় ৭মী।
বাঘে-গরুতে এক ঘাটে পানি খায়................. কর্তায় ৭মী।
তাহারা পাঁচজনে যাইবে............................. কর্তায় ৭মী।
এক ক্রোশ ঘুরিয়া তবে বাড়ি পৌঁছিলাম........... কর্মে শূন্য।
চোরে চুরি করে...................................... কর্তায় ৭মী।
লোকে নিন্দে করে................................... কর্তায় ৭মী।
স্রোতে নৌকাটি উলটাইয়া দিল..................... কর্তায় ৭মী।
বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দিব কিসে....... কর্তায় ৭মী।
ঘোড়ায় গাড়ি টানে.................................. কর্তায় ৭মী।
চন্ডীদাসে কয়, শূন পরিচয়......................... কর্তায় ৭মী।
গোরুতে দুধ দেয় ................................... কর্তায় ৭মী।
আমার পিপাসা লেগেছে............................. কর্তায় ৬ষ্ঠী।
‘চুপ কর, পিঁপড়েরা কি বলছে শুনি।’............. কর্তায় শূন্য।