অধ্যায়-৯
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ জীববিজ্ঞান বিষয়ের ৯ নাম্বার অধ্যায় থেকে একটি নমুনা প্রশ্নোত্তর আলোচনা করব।

নিচের চিত্রটি দেখে প্রশ্নের উত্তর দাও।

প্রশ্ন : ক. ব্যাপন কাকে বলে?
প্রশ্ন : খ. রসস্ফীতি চাপ বলতে কী বোঝায়?
প্রশ্ন : গ. চ দ্বারা শোষিত পানি কীভাবে ছ দ্বারা বাষ্পাকারে নির্গত হয়? ব্যাখ্যা করা।
প্রশ্ন : ঘ. চ দ্বারা যে প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ পানি শোষণ করে, উদ্ভিদের জীবনে তার গুরুত্ব বিশ্লেষণ কর।

উত্তর : ক. একই তাপমাত্রা ও বায়ুম-লীয় চাপে কোনো পদার্থের অধিকতর ঘন স্থান থেকে কম ঘন স্থানে বিস্তার লাভের প্রক্রিয়াকে ব্যাপন বলে।

উত্তর : খ. অন্তঃঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় কোষাভ্যন্তরে পানি প্রবেশের ফলে কোষ স্ফীত হয়। কোষের এ স্ফীত অবস্থাকে রসস্ফীতি বলে। এ রসস্ফীতির জন্য কোষের প্রোটোপ্লাজম কর্তৃক কোষপ্রাচীরের ওপর যে চাপের সৃষ্টি হয়, তাকে রসস্ফীতি চাপ বলে।

উত্তর : গ. চ অংশ (মূল) দ্বারা উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি শোষণ করে। প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ ছ অংশ (পত্ররন্ধ্র) দ্বারা বাষ্পাকারে পানি নির্গত করে। সাধারণত পাতার নিম্নত্বকে ছ অংশ (পত্ররন্ধ্র) অবস্থান করে। বিষমপৃষ্ঠ পাতার ওপরের ত্বকের দিকে থাকে প্যালিসেড প্যারেনকাইমা এবং নিচের ত্বকের দিকে থাকে স্পঞ্জি প্যারেনকাইসা।
স্পঞ্জি প্যারেনকাইমায় প্রচুর বায়ুকুঠুরি থাকে। বায়ুকুঠুরি বরাবর নিচের ত্বকে থাকে পত্ররন্ধ্র। মূলরোম মাটি থেকে পানি শোষণ করে এবং স্পঞ্জি প্যারেনকাইমার সংযোগস্থলে থাকা পরিবহন টিস্যুর জাইলেমের ভেসেল ও ট্রাকিড দিয়ে মূল থেকে কা- হয়ে পাতায় পেঁৗছায়। পাতায় পেঁৗছার পর পানি জাইলেম টিস্যু থেকে বের হয়ে পাতার সব কোষে ছড়িয়ে পড়ে। স্পঞ্জি প্যারেনকাইমা কোষগুলোর বহিঃপৃষ্ঠ সালোকসংশ্লেষণের প্রয়োজনীয় কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণের জন্য সবসময় ভেজা থাকে। বায়ুকুঠুরির বাতাস স্পঞ্জি প্যারেনকাইমার পানির সংস্পর্শে এসে পানি বাষ্প গ্রহণ করে এবং পত্ররন্ধ্রের পশ্চাতের বায়ুকুঠুরিতে জমা হয়। বাষ্প পরবর্তী সময় খোলা পত্ররন্ধ্র দিয়ে বায়ুম-লে বের হয়ে আসে। এভাবে চ (মূল) দ্বারা শোষিত পানি প্রস্বেদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছ (পত্ররন্ধ্র) দ্বারা বাষ্পাকারে নির্গত হয়।

উত্তর : ঘ. চ অংশ (মূল) দ্বারা অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদ পানি শোষণ করে। নিচে উদ্ভিদের জীবনে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো :
১. পানি পরিশোষণ : উদ্ভিদ মাটি থেকে মূলরোমের সাহায্যে কৈশিক পানি অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় শোষণ করে।
২. পানি চলাচল : পানির এক কোষ থেকে অন্য কোষে চলাচল অভিস্রবণ প্রক্রিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
৩. পত্ররন্ধ্র খোলা ও বন্ধ হওয়া : পত্ররন্ধ্র খোলা ও বন্ধ হওয়া পানির অভিস্রবণ প্রক্রিয়া দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।
৪. প্রস্বেদনের হার নিয়ন্ত্রণ : পত্ররন্ধ্র খোলা ও বন্ধ করার মাধ্যমে অভিস্রবণ প্রক্রিয়া প্রস্বেদনের হার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৫. কোষের স্ফীতি ও বৃদ্ধি : উদ্ভিদকোষের বৃদ্ধি ও স্ফীতি অভিস্রবণের ওপর নির্ভর করে।
৬. কোষের আকার-আকৃতি: অভিস্রবণ কোষের আকার-আকৃতি ঠিক রাখে।
৭. কোষকে দৃঢ়তা প্রদান : অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় পানি গ্রহণ করে নরম কোষ দৃঢ় হয়। জলজ উদ্ভিদের কা-ের দৃঢ়তা এভাবেই সৃষ্টি হয়ে থাকে।
৮. পানির সমবণ্টন : উদ্ভিদের প্রায় সব জৈবনিক কাজের জন্য পানি আবশ্যক। মূল থেকে পাতা পর্যন্ত বিভিন্ন জীবিত কোষে প্রয়োজনীয় পানি পেঁৗছানোর কাজটি অভিস্রবণের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়।
৯. বীজের অঙ্কুরোদ্গম : অভিস্রবণের ওপর বীজের অঙ্কুরোদ্গমের সাফল্য নির্ভর করে। অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় বীজ পানি শোষণ করতে না পারলে সেই বীজের অঙ্কুরোদ্গম হয় না।

তথ্য সত্রে অনলাইন।